সিরাজের মৃত্যু —- ডঃ পূর্ণেন্দু পত্রী
সিরাজের মৃত্যু
ডঃ পূর্ণেন্দু পত্রী
রাজধানীতে ফিরে এলেন পরাজিত এবং ভাগ্যাহত সিরাজ। আরো একবার উঠে পড়ে লাগলেন সৈন্য সংগ্রহে। ডেকে পাঠালেন নিজের পাত্র মিত্রদের। তোমরা এসো। আমাকে উদ্বুদ্ধ কর, পরামর্শ দাও। বেয়াদব বিশ্বাসঘাতক মীরজাফর আর ইংরেজদের বিরুদ্ধে আমার কি করা উচিত এখন।
বসল মন্ত্রিসভা অন্যান্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মোহনলাল ও। অধিকাংশ আমির-ওমরাহ মত দিলেন, আত্মসমর্পণের পক্ষে, নবাব আর মোহনলাল তাতে কান দিলেন না সে কথায়। এর চেয়ে জঘন্যতম কাজ আর আছে নাকি?
অন্যপক্ষ মত জানালেন পালিয়ে যান দাক্ষিণাত্যের দিকে। ফরাসিদের কাছে আশ্রয় নিন। গোপনে সংগ্রহ করুন সৈন্য । তখন আবার নামা যাবে লড়াইয়ে।
সিরাজ হাজির হলেন নিজের শশুর এর কাছে। আপনি আমার পিতার মত আপনার পায়ের নিচে শিরস্ত্রাণ রেখে আমি নতজানু হচ্ছি। আপনি আমার পাশে দাঁড়ান, আসুন আমরা সৈন্য সংগ্রহ করি।
ইরিচ খাঁ ইতিমধ্যে বুঝে গেছেন রাজধানীর হাল চাল। সৈন্য সংগ্রহ করে যুদ্ধ করা এখন বাতুলতা। তারচেয়ে জরুরি কাজ হল পালিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচানো। জামাইয়ের কাতরোক্তিতে কান দিলেন না তিনি। গুছাতে লাগলেন নিজের ধনরত্ন এবং সরে পরলেন মুর্শিদাবাদ থেকে।
এই সময়ে সিরাজের মাথায় এসে গেল সৈন্য সংগ্রহের একটা কৌশল। তিনি হুকুম জারি করে দিলেন খুলে দিলাম আমার রাজকোষ প্রত্যেক সৈনিক আগাম বেতন পাবেন তিন মাসের। এসে যোগ দিন সৈন্যদলে।
উন্মুক্ত ধনাগারের সামনে লোকারণ্য। নবাবের হুকুমে দান চলল মুক্তহস্তে। জীবনে যারা মুখ দেখেনি তলোয়ারের, তারাও ছুটে এল সৈনিক পরিচয় নিয়ে। সকলেই প্রতিজ্ঞা করলে আবার নামবে শেষ লড়াইয়ে। কিন্তু টাকা পয়সা পাওয়ার পর কাউকে আর খুঁজে পাওয়া গেল না ।
সিরাজের চেষ্টাও ব্যর্থ হলো। তিনি বুঝলেন মুর্শিদাবাদে থাকা মানেই মৃত্যু। সায়ান্নে আর রত্ন দীপালোকে রাজধানী উজ্জ্বলিত হইয়া উঠলো না। রাজ বৈতালিকদের যন্ত্রসংগীত আর বায়ুভরে দূর-দূরান্তের মোগলের গৌরবগীতি বিঘোষিত করিল না। পার্শ্বচরগণ আর নবাব সিরাজদৌলার আজ্ঞা পালনের অপেক্ষায় করজোড়ে করে সম্মিলিত হইলোনা। রাজপুরী জনসমাগম হীন শ্মশান সৈকতের নাই লাগিল। হায়! হায়! করিতে লাগিল। সেই শ্মশানভূমি মীরজাফরের বিজয় উল্লাস আগ্নেয়াস্ত্র ভিম কলরবে গর্জন করিয়া উঠিল। সিরাজদৌলা চুপ চাপ চাহিয়া রহিল। দেখিলেন মোগল রাজ্যভিনয়ের শেষ চিত্রপট উদঘাটিত হয়েছে। জনহীন পাষাণ প্রাসাদে যেন ভয়ঙ্কর ভাবে তাহাকে গাস করিতেছে। তখন মাতামহের মমতা নিলিপ্ত হিরাঝিলের বিচিত্র রাজপ্রাসাদ এবং বঙ্গ বিহার উড়িষ্যার বলিদর্পিত মোগল রাজসিংহাসন পশ্চাতে রাখিয়া, নবাব সিরাজদৌলা পথের ফকিরের ন্যায় রাজধানী হইতে বাহির হইয়া পড়িলেন। একজন মাত্র পুরাতন প্রতিহারী এবং চির-সহচরী লুৎফান্নেসা বেগম ছায়া ন্যায় পশ্চাতে পশ্চাতে অনুগমন করিতে লাগিল।
নিজের পালানোর আগে অন্তঃপুরের লোকজন পাঠিয়ে দিলেন ঢাকা ডুলিতে! পঞ্চাশটা হাতির পিঠে বোঝাই হইল ধনরত্ন। নিজে বেরুলেন দীনহীন বেশে। ঐতিহাসিকদের মতে ফকির ছদ্মবেশে সঙ্গে ছিল লুৎফুন্নেসা ও শিশু কন্যা ওম্মৎজহুরা আর একজন বিশ্বস্ত খোজা প্রহরি, আর ছিল একটা পেটিকা, যার মধ্যে ছিলো মূল্যবান কিছু হিরে জহরত। কারো মতে সময়টা ছিল তিনটে। আবার কারও মতে রাত এগারোটা। যাবেন রাজমহল । কিন্তু সোজা রাস্তায় গেলেন না, ধরলেন অন্য এক ঘুরপথ। অনুমান করে নিয়েছিলেন শত্রুরা অনুসরণ করবে তাকে। তাই চেনা সড়ক ছেড়ে বাঁকা পথে ভগবানগোলায় স্থলপথ ছেড়ে ধরলেন জলপথ।
যদুনাথ সরকার সংকলিত “বাংলার নবাব” -এ করম আলি-র “মুজাফ্ফর নামা”-য় অন্য রকমের ছবি।
সিরাজের নৌকা ছুটে চলেছে মহানন্দার উপর দিয়ে। কোন কোন ঐতিহাসিক যেমন অর্মে বা ম্যালকম, মনে করেন যে নবাব নৌকায় চেপে ছিলেন মুন্সিগঞ্জ রাজপ্রাসাদের কাছাকাছি কোন ঘাট থেকে। আগে থেকেই নৌকো হাজির করা হয়েছিল সেখানে মুতাক্ষরীণের খেদ, নবাব জলপথে না গিয়ে, ভালো করতেন স্থলপথে গেলে। অর্থ বা পুরষ্কারের লোভে লোক জুটে যেতো অনেক। এমনকি একটা ছোটখাটো সৈনদলও গড়ে উঠতে পারত রাস্তাতেই। তাতেই ধরা পড়ার ভয় ছিল কম ।
25 শে জুন সকাল আটটা। মীরজাফরের লেখা একটা চিরকুট এসে পৌঁছলো ক্লাইভের কাছে। তিনি অর্থাৎ নবাব পালিয়েছেন রাত এগারোটা নাগাদ আমি খবর পেলাম বারোটায় । লোক পাঠিয়েছি পেছনে ধাওয়া করার জন্য। খোদাতাল্লার আশীর্বাদে যিনি নিশ্চয় ধরা পড়বেন।
26 তারিখে আরও একটি চিরকুট। “আমার সৈন্যদলের একটা অংশকে পাঠিয়েছি নবাব সিরাজদ্দৌলার সন্ধানে, তিনি এখন ভাগ্যহত। খোদাতাল্লার সাহায্যে সৈন্যরা তাকে বন্দী করে ধরে আনবে শীঘ্রই, আপনি এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেন।
ক্লাইভ নিশ্চিন্ত হননি, তাই মীরজাফরের কাছে পাঠিয়েছিলেন বেশ কিছু সাহসী সৈনিক। সঙ্গে দিয়েছিলেন তার বিশ্বস্ত দুই অনুচর ওয়াটস ও ওয়ালসকে। যখন ২৬ শে জুন দুপুর তিনটেয় হিরাঝিল এসে পৌঁছল, মীরজাফর তখন দিবা নিদ্রায় মগ্ন। অভ্যর্থনা জানালেন মীরন আর উমরবেগ। মুর্শিদাবাদে তাদের যাবতীয় অভিজ্ঞতার কথা তারা লিখে জানিয়েছিল ক্লাইভকে ওইদিনই হোসেন কুলি খাঁর বাগান থেকে।
দুপুর তিনটে আগে আমরা হীরাঝিলে পৌঁছতে পারলুম না। মীরজাফর তখন ঘুমন্ত। তার পুত্র মীরন আর উমরবেগ অভ্যর্থনা জানালো আমাদের। খবর পেলাম সিরাজ পালিয়েছে আগের দিন রাত বারোটার সময়। তার আগেই প্রাসাদে সমস্ত রমণীদের পাঠিয়ে দিয়েছেন। সকাল দশটার সময় পঞ্চাশটা হাতির পিঠে যাবতীয় ধনসম্পত্তি সোনাদানা হিরে জহরত বোঝায় করে তিনি যে কোন দিক দিয়ে পালিয়েছেন তা জানা যায়নি। তবে প্রত্যেক রাজ্যের রাজার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে তাকে আটকানোর জন্য। পাঠানো হয়েছে সৈন্য-সামন্ত। নবাব মীরজাফর এবং তার পাত্র-মিত্রদেরই বিশ্বাস নবাব ধরা পড়বেন অচিরেই। মোহনলাল এবং নবাবের কোষাধ্যক্ষ ধরা পড়েছেন। তবে তাদের বিচার এখনো শুরু হয়নি। নবাব মীরজাফর জেগে উঠেই আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন। কিন্তু সেই সময় পাত্র-মিত্রদের সঙ্গে আলোচনায় এমন উত্তেজিতও হয়ে উঠলেন যে আমাদের সঙ্গে আর বেশি কিছু আলোচনা হলো না। আমরা রওনা দিলাম জগৎশেঠের বাড়ির দিকে তিনি বললেন নবাবকে ধরা শক্ত। তার পার্টনার নায়েব রামনারায়ন এর সঙ্গে রয়েছে 10 থেকে 15 হাজার অশ্বারোহী। নবাব সেখানে পৌঁছলে এই সাহায্যে তো পাবেই। উচিত হল মীরজাফর আর কোম্পানির উভয় সৈন্যদলের একসঙ্গে বেরিয়ে পড়া। এরপর মীরজাফর এসে যোগ দিলো সভায়, সঙ্গে মানিকচাঁদ , রায়দুর্লভ আর শেঠজীর ভাই। আমরা বললাম, যত রকমের উপায় আছে, সবটাই নবাব সিরাজকে বন্দি করার কাজে লাগানোর জন্য।
মীরজাফর এর চেয়ে ইংরেজদের মাথাব্যথা যেন বেশী। মীরজাফর ঘোরতর সংকটেও দিবানিদ্রা দিতে পারেন কিন্তু ক্লাইভ এবং তার দূতদ্বয়ের চোখে ঘুম নেই। শুরু হয়ে গেল তল্লাশি, রাস্তায় ধরা পড়ল সিরাজের জেনানা-মহলের নারীরা। আর সেই পঞ্চাশটা হাতি। কারারুদ্ধ করা হলো সিরাজের ভাই মির্জা মেহেদী আলীকে। মোহনলাল পা বাড়িয়েছিলেন ভগবানগোলার দিকে, সিরাজের সঙ্গে মিলবার জন্য। তাকে ধরে ফেলা হয়েছে মাঝপথে, কারারুদ্ধ হলেন তিনিও। তার জীবনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল রায়দুর্লভ এর হাতে। আর রায়দুর্লভ তার হাতে তুলে দিলেন বিষের পাত্র । মোহনলাল মারা গেলেন বিষের জ্বালায় নিল হতে হতে।
রাজধানী শত্রুহীন, তবুও ক্লাইভের মুর্শিদাবাদের পা বাড়াতে ভয়। তার কারণ কি করে যেন বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছিল এমন একটা আশঙ্কা যে ক্লাইভ মুর্শিদাবাদের পা দিলেই হত্যা করা হবে তাকে।
সাতাশে জুন বেলা একটা সময় ক্লাইভের হাতে এসে পৌঁছল ওয়াটাস এবং ওয়ালসের চিঠি।
দুদিন পর উনত্রিশে জুন ক্লাইভ ঢুকলেন মনসুরগঞ্জে। সঙ্গে .২০০ গোরা সৈন্য ও ৫০০ দেশী সৈন্য। রাজ পথের দু’ধারে জনারণ্য। তাদের দেখে মনে মনে ভয় পেয়েছিলেন ক্লাইভ, পার্লামেন্টের সাক্ষ্য দেওয়ার সময় স্বীকার করেছিলেন নিজে মুখে সে কথা।
সেদিন যত লোক রাজপথের পার্শ্বে সমবেত হইয়াছিল, তাহারা ইংরেজ নিধনের কৃ্তসংকল্প হইলে কেবল লাঠিপেটা এবং লোষ্ট্রনিক্ষেপেই তৎকার্য সাধন করিতে পারিত।
সেদিন ক্লাইভ কোম্পানির প্রতিনিধি হয়ে মীরজাফরকে অভিবাদন জানালেন বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব বলে। দরবারে উপস্থিত ছিলেন নতুন নবাবের পাত্র মিত্ররা।
29 শে প্রাতে ক্লাইব মুরাদবাগে উত্তীর্ণ হইবার পরেই মীরন তাহাকে প্রাসাদে আনায়ন করিবার জন্য প্রেরিত হইলেন। মীরজাফর খাঁ পাত্র-মিত্র গন ও প্রধান সামন্ত বর্গসহ অপেক্ষা করিতেছিলেন। প্রাসাদের সর্বাপেক্ষা বৃহৎকক্ষে দরবার বসিল। উত্তর-পার্শ্বে সুসজ্জিত মসনদ স্থাপিত হইয়াছিল। মীরজাফর খাঁ স্বয়ং উপবেশন করতে ইতস্ততঃ করিতেছিলেন দেখিয়া ক্লাইভ অগ্রসর হইয়া তাহার হস্ত ধারণপূর্বক মসনদে বসাইয়া দিয়া ইংরেজ কোম্পানি প্রতিনিধিরূপে স্বয়ং সর্বপ্রথমে স্বর্ণমুদ্রা নজর প্রদান ও বঙ্গ বিহার উড়িষ্যা সুবাদার সম্বোধনে অভিবাদন করলেন। অতঃপর অন্য সকলের নজর অভিবাদনাদি চলিতে লাগিল। ক্লাইভ দোভাষীর দ্বারা সভাগত সমস্ত লোকজনকে জানালেন-
দেশের ও তাঁহাদের সৌভাগ্য বলে সিরাজদ্দৌলার মত অত্যাচারী সুবেদারের হস্ত হইতে পরিত্রান পাইয়া তাঁহারা এমন উৎকৃ্ষ্ট একজন নবাব পাইলেন। অতঃপর সকলেই নতুন নবাব এর নিকট নজর দ্বারা বশ্যতা ও মনস্্তৃপ্তি জানাইলেন। নিরপেক্ষ এবং সিরাজের পক্ষপাতী যে দুই একজন ছিলেন, তারাও ভয়-মিত্রতায় নব নবাবের অনুকূল হইলেন। রাজা দুর্লভ রামকে অভিসিক্ত করিয়া, মীরজাফরকে সিংহাসন সুদৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠিত হইবার ব্যবস্থা করতে লাগলেন।
পরের দিন সকাল হতেই শুরু হল টাকা-পয়সা এবং পাওনা গন্ডা হিসাব। ক্লাইভ বলিলেন এবার সন্ধি শর্ত টাকাপয়সা মেটাও। এর কদিন আগে ক্লাইভের দুই অনুচর এবং ওয়াটস এবং ওয়ালস প্রথম প্রস্তাব পেশ করেছিলেন দুর্লভ রামের কাছে। দুর্লভ রাম জানিয়েছিলেন প্রতিশ্রুতি দুই কোটি দুই লক্ষ টাকা রাজকোষে নেই। দূতেরা বললেন তাহলে জগত শেটএর কাছ থেকে ধার করুন। দুর্লভ রাম উত্তর ছিল কোটি পরিমাণ ঋণ দেওয়ার মতো ক্ষমতা তাদের নেই। ক্লাইভ আবার তুললেন সেই টাকার প্রসঙ্গ, মীরজাফর এর কাছে। মীরজাফর জানালেন রাজকোষে অত টাকা নেই। ক্লাইভ জানালেন তাহলে শেঠের কাছে চলুন। সেখানেই মীমাংসা হবে। জগৎশেঠের বাড়ি দিকে রওনা হলেন মীর জাফর দুর্লভ রাম প্রমুখ এবং ছিলেন আরো একজন তার নাম উমিচাঁদ ।যখন সন্ধি অনুযায়ী টাকা-পয়সার হিসেব নিকেশ চলছে তখন উমিচাঁদ কোথায় এই নিয়ে দুইরকম মতামত। কেউ বললেন তিনি ছিলেন ঐ মন্ত্রণা ঘরেই, সকলের সঙ্গে। ক্লাইভ তার নিজের জবানবন্দিতে বলেছিলেন উনি ছিলেন তার সঙ্গে। অন্যদের অন্য মত।
জগৎ শেঠের বাড়িতে চলছে হিসেব-নিকেশ। দুর্লভ রাম প্রথমে জানিয়েছিলেন রাজকোষের দেওয়ার মত টাকা নেই। শেষ পর্যন্ত স্থির হল পাওনা টাকার অর্ধেকটা নগদ আর মণিমুক্তো মিলিয়ে ইংরেজদের দেওয়া হবে এখনই, বাকিটা হবে ধীরে ধীরে তিন বছরে আর সেই টাকার ওপরে বসবে শতকরা 5 টাকা কমিশন। মীরজাফরের পক্ষ তাতেই রাজি।
এবার এল উমিচাঁদের পালা। ক্লাইভ ইশারা করলেন স্ক্রাফটনকে, তুমি গিয়ে উমিচাঁদের কাছে যা বলার বল। জানিয়ে দেও, তিনি কিছু পাবেন না, কারন সন্ধিপত্রটা জাল। স্ক্রাফটনের মুখে এই কথা শুনে মাটিতে আসলে পড়লেন তিনি। জ্ঞান হারালেন। জ্ঞান হারানোর মত অবস্থা ভৃত্যের দল ছুটে এসে পালকি করে পাঠিয়ে দিল বাড়িতে। তারপর থেকে উন্মাদ অবস্থা সবসময়ই বিড়বিড় করতে লাগল, লাল কাগজ , লাল কাগজ।
ক্লাইভ দেখা করতে গেলেন উমিচাঁদের বাড়িতে। তারপর পরামর্শ দিলেন জান তীর্থ করে আসুন। সব সেরে যাবে। শান্তি পাবেন। ইতিহাস পড়লে জানা যায় তিনি ক্লাইভের পরামর্শ মতে মালদহের কাছে কোন একটি জায়গায় গিয়েছিলেন। এখন ফিরলেন তখন একেবারে ক্ষিপ্ত অবস্থায়। এরপর থেকে নাকি ভিম রতি দেখা দিয়েছিল। পোশাক-পরিচ্ছদের আরম্ভর মণিমুক্তো অলংকার গায়ে পড়তে লাগলেন। এই ভাবে দেড় বছর কাটানোর পর তার মৃত্যু হয়।
ক্রমশ