পরমার্থ লাভ♥♥ #শ্বেতা_ব্যানার্জী
পরমার্থ লাভ♥♥
#শ্বেতা_ব্যানার্জী
“নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী,
প্রত্যেক ক্রিয়ার বিপরীত এবং সমান প্রতিক্রিয়া আছে”
পরকীয়া কি অশ্লীল!! বিচার বিভাগ বলছে না।
এই আখ্যা দিচ্ছে আমাদের সমাজ।
পরকীয়া পাপ তো নয়ই বরং প্রাণের এক বাস্তব বহিঃপ্রকাশ শুধু কোনও ক্ষতি সাধন না হলেই হলো। বিবাহ একটা সমাজ স্বীকৃত পারমিশন।
আইনে বাধা নেই কেন!!
…..যদি দুটি সুস্থ মন একত্রে মিলিত হতে চায়
অসুবিধা কোথায়!!
বিবাহিত নারী ও পরপুরুষের সম্মতি তে মিলন
কে অন্যায় বলা চলেনা।
কারণ তারা প্রাপ্ত বয়স্ক। নারদস্মৃতিতেও তার উল্লেখ আছে।
কোন ধর্মগ্রন্থ একথা মানেনা পরকীয়া পাপ।
এটা মানুষের সৃষ্টি।
অনিচ্ছুক ব্যক্তির উপর বলপ্রয়োগ বা উস্কানি মূলক মন্তব্য যথেষ্ট উদ্বেগের এবং অশালীন।
সে কথা নিজের স্ত্রীর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
প্রেমহীন পরকীয়া অন্যায়।
……..আমরা পরকীয়া প্রেম কে পূজা করে আসি
তার প্রমাণ বৈষ্ণব পদাবলী তে পাই, রাধাকৃষ্ণের প্রেম, যা পরকীয়া নয় জীবন ধর্ম রূপে আমাদের মননে।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে মহর্ষি ভরদ্বাজের পুত্র,দ্রোনাচার্য দ্রোন অর্থাৎ তামার পাত্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন… তাঁর জন্মবৃত্তান্তে জানা যায়
একদা মহর্ষি ভরদ্বাজ গঙ্গায় স্নানের সময় অপ্সরা ঘৃতাচী কে দেখে উত্তেজিত ও কামার্ত হন তিনি সেই উত্তেজনা প্রশমিত করতে একটা তামার কলসে স্পার্ম সংরক্ষণ করেন। আর সেই কলস থেকে দ্রোণের জন্ম হয়।
তা হ’লে বোঝা যাচ্ছে মহর্ষিরা যখন এইরকম আচরণ করেন তা’কে আমরা ভক্তিরসের আচ্ছাদন দিয়ে নমস্য করে তুলি, তাছাড়া তখনও টেস্টটিউব বেবি হ’তো… কিন্তু এখনও আমরা মহিলাদের বাঁজা এই আখ্যা দিয়ে টেস্টটিউব সন্তানকে সেইভাবে মেনে নিতে পারিনা —-
আবার মহাভারতে দেখি,কুন্তীর বা বিচিত্রবীর্যের ও পান্ডুর, সেও তো স্পার্ম সংরক্ষণ।
পিতৃতান্ত্রিক সমাজে পিতৃতন্ত্র জারি রাখার জন্য
সন্তান উৎপাদনে অক্ষম পুরুষ,স্পার্ম ব্যাঙ্কের সাহায্য নিয়ে স্ত্রী কে গর্ভবতী করছে..।
তখন বলা হচ্ছে এটা বিজ্ঞানসম্মত। এটা যদি বিজ্ঞানসম্মত তা’হলে অক্ষম পুরুষের স্ত্রী কিম্বা বাল্যবিধবা,তার জৈবিক ক্ষুধা মেটাতে পর পুরুষে অনুগামিনী হলে অন্যায় কোথায়!!
তা’হলে কেন সমাজ গেল-গেল রব তুলে বিচার ব্যবস্থা করবে।
বাল্যবিধবা বা অল্প বয়সের বিপত্নীক পুরুষ
যদি ভালোবেসে সংসার বসায়।অন্যায় কোথায়!!
আমার মনে হয় সন্তানদেরও মা-বাবার পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সুখী করার দায় নেওয়া উচিত।
কারণ সন্তানরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে দূরে থাকবে…।
আর মা অথবা বাবা একাকীত্বের ভার মুখ বুজে
সয়ে যাবে সমাজের ভয়ে!!!
আজ ধর্ষণ এক সামজিক ব্যাধি রূপে ছড়িয়ে পরছে—–
এর পিছনেও ওই একই কারণ কাম কে ধর্মের দড়িতে বেঁধে রেখে বিকৃত করে তোলা,
সামজিক অনুশাসন বিধিবিধান এই মানসিক রুগির বীজ বপন করছে….
পশ্চিমের দেশগুলিতে এই অনুশাসন নেই।
সেখানে মানুষ, মানুষ হয়ে ঘোরাফেরা করতে পারে।
সেখানে ধর্ষণ থাকলেও তা তুলনামূলক কম,
…..সুস্থ সন্তান মানুষ করার জন্য, মা-বাবা দুইজনের দায়িত্ব অপরিহার্য।
সেইরকম একজনের অবর্তমানে তাদের একজন বন্ধু খুঁজে দেওয়া ছেলে মেয়ের দায়িত্ব।
আসল হলো মনের শুদ্ধতা।
যেখানে দুটি মন ভালোবেসে মিলিত হতে চাইছে.সেখানে অন্যায় বা লজ্জা নেই., আছে পরমার্থ লাভ।
ভগবানের ক্ষেত্রে যা অভিসার, মানুষের ক্ষেত্র তা
কেন অন্যায়!”
ভেবে দেখতে পারেন সমাজপতিরা….
না’হলে পাপের পরকীয়ায় পরকাল ঝরঝরে হবে।
নিষেধের বেড়াজালে সমাজ কে যত শক্ত করে
বাঁধতে চাইবে. বাঁধন আলগা হয়ে পাপাচারে পথ
ততই পিচ্ছিল হবে….। বাড়বে খুন, নোংরামি, ধর্ষণ।
সমাজকে একটা সুস্থ চোখ দিলে —–
মানুষের ভিতর থাকা সুপ্ত শয়তান, সে ও দিন বদলের দিনগুনে আস্তে আস্তে সুস্থ মানুষ হয়ে উঠবে…।