মেলা হস্তশিল্প মেলা কলমেঃ শুভা গাঙ্গুলি
মেলা
হস্তশিল্প মেলা
কলমেঃ শুভা গাঙ্গুলি
ইকো পার্কের বিশাল খোলা মেলা এরিয়াতে মেলার উপযুক্ত সব কিছুই আছে, হাত পা ছডিয়ে মেলা প্রাঙ্গনের মাটিতে পসরা সাজিয়ে বসে পডো, অথবা একটা দোকান ভাড়া করেও নিতে পারো, গ্রাম্য মেলার আন্তরিকতা , শহুরে মেলার অপর্যাপ্ততা সবই আছে হস্তশিল্প মেলায়।
এ বছরের ব্যাপারটা দীর্ঘ শত বছরের থেকে আলাদা,কারণ অনেক দিন অনেক দিন ব্যাপার বন্ধ, অতিমারী তে বিদ্্ধস্থ সারা বিশ্ব,মৃত্যু ছিনিয়ে নিচ্ছে ধনী গরিব উচ্চ নীচ কত মানুষের প্রাণ,
গৃহবন্দী মানুষ, যানবাহন বন্ধ, কি করে করবে ব্যবসা,রসদ নেই, যাতায়াত নেই, রোগের জীবাণু যে রাস্তায় ঘুরছে।
এমত অবস্থায় সবার ঘরেই দানা পানির অভাব, পরিবারের ভরণ পোষণ করাই যেখানে বিষম সমস্যা, সেখানে কাঁচামাল এনে সামগ্রী তৈরীর প্রশ্নই নেই।
আজ এতকাল পরে এই শীতের দিনে ইকো পার্ক একটা মেলার ব্যবস্থা করেছে, যে যা পারে এনে পসরা ফেলেছে, শাড়ী ,চাদর, বসার আসন, কাঠের কাজ, পেটোর কাজ, কাগজের ফুল, ঘর সাজাবার সরঞ্জাম, হলেই বা গ্রাম্য কাজ, সৌন্দর্য তো আমাদর দৃষ্টিভঙ্গীর ওপর আমাদের বিচক্ষণতার ওপর নির্ভর করে।
মেলা প্রাঙ্গনের নিয়ম আর মজা আগের মতো নেই, ভীড় ঠেলে যেতে হচ্ছে না , পুলিশি তৎপরতায়, জন সমাগম কন্ট্রোল করা হয়েছে, ঘরে তৈরী জ্যাম জেলী আচার এনেছেন তাঁরা , পিঠে পুলিও অনেক কিন্তু একটা ভয় তাডিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষকে, খাওয়াটা কি ঠিক হবে, যাঁরা স্বাস্হ্য সচেতন তাঁরা কিনছেন না ঠিকই, তবে যাঁরা ভাবছেন সামান্য কিছু নিলে এনাদের পরিবার ভালো থাকবে, তাঁরা নিচ্ছেন, স্যানিটাইজারে ধৌত করেই জিনিস কিনছেন তা ঘর সাজাবার সামগ্রী হোক বা ছোটখাটো যাই হোক।
হস্তশিল্প আমাদের দেশের ঐতিহ্য,
হাজারো রকমের মাটি কাঠ চট ইত্যাদির সূক্ষ শিল্প আমরা এই সব মেলায় দেখে থাকি,
যে শিল্পকলা ক্রমশঃ অবলুপ্তির পথে তাকে বাঁচিয়ে। রাখাটা তো জনগনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে , সামান্য অর্থের বিনিময়ে আমরা যদি দূর দূর গ্রাম থেকে আসা দুস্থ মানুষের মুখে হাসিফোটাতে পারি, যদি তাদের শিল্পকলাকে সম্মান জানাতে পারি তাহলে হয়তো আমাদের শিল্প সারা বিশ্বে ছডিয়ে পড়ে আমাদের শিল্পীকেও সম্মান জানাবে ,
আমিও নিয়েছি কিছু আমার সাধ্যের মধ্যেই, কিছু নিজের জন্য , কিছু সবাইকে উপহার দেবার জন্য ।
মেলা ঘোরা সাবধানতা অবলম্বন করে সার্থক হোল আমার।