কবি রঞ্জন রামপ্রসাদ সেন —– তপতী মুখার্জী
কবি রঞ্জন রামপ্রসাদ সেন।
তপতী মুখার্জী
আজ আমরা মা কালীকে ঘরে ঘরে পাড়ায় পাড়ায় পুজো করি।কিন্তু একসময় মা কালী ছিলেন শ্মশানবাসিনী।তান্ত্রিকের বা ডাকাতদলের দেবী।এই দেবীকে আমাদের ঘরের মেয়ে করে তুলেছেন যিনি তিনি সাধক রামপ্রসাদ সেন।তিনি কতটা সাধক ছিলেন বলতে পারব না।কিন্তু গীতিকার সুরকার হিসাবে অনন্য।বর্তমান প্রজন্মও তাঁর গান শোনে।বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর গান গাওয়া হয়।এখনও কালীপুজোতে ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য্য,রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের বা আরও অন্য শিল্পীর যে রেকর্ড বাজে সেগুলির রচয়িতা তিনি।
মা কালীকে তিনি পাথরের মূর্তি হিসাবে না দেখে ঘরের মেয়ের মতো দেখেছেন।যার কাছে সব আবদার করা যায়।গ্রাম্য জীবনের পুরো ছবিটা তাঁর গানে আছে।আটপৌরে সংসারের জীবন যাত্রাকে মা কালীর সঙ্গে জড়িয়ে কাব্যচর্চা উল্লেখ যোগ্য।ঝরঝরে বাংলায় লিখেছেন।সংস্কৃত শব্দ দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিব্রত করেননি।প্রতিটি শব্দে মা কালীর প্রতি আবেগ ভক্তি রয়েছে।মা কালী তাঁর মেয়ে হয়ে দর্শন দিয়েছেন আবার অন্নপূর্ণা হয়ে গান শুনেছেন।
চিকিৎসক পিতার ইচ্ছা ছিল চিকিৎসক হন।কিন্তু তিনি সেপথে গেলেন না।পিতার মৃত্যুর পর সাংসারিক দুরবস্থার কারণে এক জমিদার বাড়িতে খাতা লেখার কাজ নিলেন।কিন্তু হিসাব লেখার পরিবর্তে গান লিখে বিতর্ক সৃষ্টি করলেন।জমিদার তাঁর প্রতিভার কথা জানতে পেরে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন এবং মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করেন।
কৃষ্ণচন্দ্র দে তাঁকে সভাকবি করেন এবং একশ একর জমি প্রদান করেন।নবাব সিরাজদৌল্লাও তাঁর গান শুনে মু্গ্ধ হন।
কথিত আছে কালীপুজোর পর মায়ের মূর্তি মাথায় নিয়ে বিসর্জন দিতে নদীতে নেমে আর উঠে আসেননি।