জীবনপুথি কাব্য থেকে নুরুন্নাহার শিরীন

জীবনপুথি কাব্য থেকে
নুরুন্নাহার শিরীন
📖
এক।।
অভূত আশার হাত ক্রমে কুঁকড়ে যায়।
যা কিছু সহসাধ্য ছিলো প্রিয় বাংলায় –
যা কিছু সহজ পথ জগতবাড়ির সোঁদামাটি –
অযথা আমরা তার চারপাশেই গর্ত খুঁড়ে রাখি !
দেখেছো? কেমন বেঁকে বিপর্যয়ের খাদের দিকে
গড়িয়ে পড়ছে এই বাংলার ছবি রঙ ওঠা ফিকে।
অথচ আমরা ঠিক পারতাম তাকে ছবি তে রাঙাতে।
সুন্দরের জয়মাল্যে ভাঙা অভিমানও ভাঙাতে।

কেউকেটা রাগান্বিত বেহুদা নাক ফুলিয়ে, ফুলিয়ে বুক
কেউকেটারা বাংলা অশুদ্ধ বানানে লেখে হাসিমুখ।
হাই-হ্যালোয় ভাসিয়ে সামাজিক যোগাযোগ
নিজ ঘরে সেই আদ্যিকালের যোগবিয়োগ।
ভাগ বলতে মায়ের যা ভাগ তো নয় সে ভগ্নাংশ।
দেখো ভাগের হিস্যা বন্টনে যার যা প্রাপ্য অংশ –
সেইখানে কেউ কাউকেই ছাড় দিতে রাজী নয়।
সেইখানে সকলেই অনড় আমরা ত্যাঁদড়ও মনে হয়।
তো এই মনুষ্য চরিত্রের মানুষগুলো হেসেখেলে –
জীবন কাটাই আর অযাচিত মাথা গলাই সুযোগ পেলে –
খেয়ে না খেয়ে কেমন নাচি যেমনি নাচাও তেমনই।
সব খাকি খোকাখুকু বয়স হলেও তেমনই।
বয়স হয়েছে বলা মানেই ছেলেমানুষি ছলেবলে –
সবখানেই ঢুঁ মারা নগদ নেওয়া জলেস্থলে।
মুফত কে পায় কিছু ভোট পেতেও নগদ কারবার।
বাণিজ্যেই বসতি আহ জীবনানন্দেও নেই ছাড়।

সেই যে পেয়েছি বিনামূল্যে মেঘভর্তি কিছু পাতা !
সেই তো শুকনোপাতা ধূলো উড়িয়ে ঠেকাই মাথা।
আহ মা কী আর তেমন মা ভুবনজয়ী আঁচল পাতা।
আহ মা কী আর তেমন মা ভুবনজয়ী আঁচল পাতা।

দুই।।
ও মা তুমি বসতে দিলেই শুতেও যে চাই !
ও মা তুমি ছাড়া এমন পাগলপারা ঠাঁই –
কোথাও কী আর আছে !
যেথায় আমরা বেশ ঝোলেঝালে ভাতেমাছে –
ভেতোবাঙালি বলেই খ্যাত !
খ্যাতি কে না চায় বলো অখ্যাত বিখ্যাত !
এমন কী কুখ্যাত সেও কম না তারও বিরাট চাওয়া !
এইসব না হলে জীবন সে পানসে খুব।
মালপানি তো পেলেই হলো তাতেই তাবৎ সুখ।
দুঃখে কী আছে ভাই চোখের জলের দাম নাই।
বোতলজাত বিকোয় জল সে বহুল বাণিজ্য ভাই।
কে না জানে অভাবে স্বভাব নষ্ট কসাই।
কবির দোহাই ‘নষ্ট হয়ে যাই প্রভু নষ্ট হয়ে যাই’।

ঢাকা বাংলাদেশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *