“বোধ” —— রীনা সাহা।
“বোধ”
রীনা সাহা।
“তলায় পাঁক, মাঝখানে জল, ওপরে পানা—এই হল মোটামুটি জীবন।”
কোনোরকমে পানা সরাতে পারলে একটু সূর্যের আলো প্রবেশ করে—সেটাই হল ঈশ্বরের আশীর্বাদ।
কথাগুলো কোথাও পড়েছিলাম একদিন, আজ বেঁচে থাকার মন্ত্র মনে হয়।
মন্দির, মসজিদ, গীর্জায় ঈশ্বর খুঁজতে যাওয়ার দলে আমি নেই
ভগবানকে খুঁজলে, দেখার মত চোখ থাকলে
প্রায়ই হয়ত দেখা দেন তিনি।
সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি পশু ও মানুষ
দুইয়েরই আহার আছে, নিদ্রা আছে, আছে শারীরিক চাহিদা।
কিন্তু মানুষকে সৃষ্টিকর্তা ধর্ম দিয়েছেন
পশুকে তা দেননি।
এই ধর্ম হিন্দু, ইসলাম, জৈন,বৌদ্ধ ইত্যাদি নয়।
এ ধর্ম মানুষের ধর্ম
গান গাইবার ধর্ম, ছবি আঁকবার ধর্ম, লেখালেখি করার ধর্ম, ঈশ্বর ভজনের ধর্ম, সর্বোপরি সেবার ধর্ম।
সব ধর্মের কিছু স্বার্থপর মানুষ নিজেদের স্বার্থে এই ধর্মের সংজ্ঞা পাল্টে ফেলেছে এবং তা মানুষকে বোঝাতে সক্ষমও হয়েছে।
আজ ঈশ্বর আমাদের কাছে উপহাসের বস্তু কেন ?
তা তলিয়ে ভাবার অবকাশ, গভীরতা আমাদের বেশিরভাগেরই নেই।
ঈশ্বরবোধ যে আমাদের ভেতরের শুভ, সত্য, শাশ্বত বোধগুলিকে জাগ্ৰত করে
আর পাশববৃত্তিগুলিকে শাসন কোরে এক নিষ্কলুষ জীবনের পথ দেখায়
তা কি আমরা মনে রেখেছি ?
পশ্চিমীরা আমাদের সংস্কৃতির ওপর শ্রদ্ধাশীল হচ্ছে
আমাদের বর্তমান প্রজন্ম ওদের নকল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
সাপ যে খোলস ফেলে যায় অতীতের গুহার ভেতর
সেই অন্তঃসারশূন্য খোলসের প্রতি জঘন্য আকর্ষণ।
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, অর্থকরী-বিদ্যা, বাড়ি-গাড়ি, বিদ্যুৎ ,আ্যটোম— এ সবের নেশা যে আপাতসুখ, আপাতদম্ভ আমাদের দিয়েছে
তার কতটুকু আমাদের পক্ষে ভালো-
তা একদিন চোখের জলে আবিষ্কার করতে হবে আমাদেরই।।