করোনার করুণায় কোন পথে দেশ, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে নিরাশ দেশবাসী
২৫শে মার্চ, কলকাতাঃ করোনা মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষনে সকলে আশা দেখেছিল যে, প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে করোনা সংকট থেকে কিছু রেহাই দেবে, সঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে আর্থিক সংকটের মুখে পড়া পরিস্থিতি থেকে বের করবার পথ দেখাবে এবং সারাদেশে হাসপাতাল ও তার পরিকাঠামো উন্নয়ন এর বিষয়ে পথ দেখাবে। কিন্তু সবকিছুকে পিছনে ফেলে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে দিল 21 দিনের কারফিউ, যা থেকে অর্থনৈতিক অচলাবস্থার মুখে পড়তে হলো দেশের 130 কোটি মানুষকে। সারাদেশে করোনা কিট ও ওষুধের বদলে মিলল ঘর থেকে না বেরোনোর দাওয়াই। এত বড় আর্থিক বিপর্যয় প্রধানমন্ত্রী মাত্র 15000 কোটি টাকার যে আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করলেন, তা এতবড় সংকটের মুখে শুধুমাত্র নরসির সমান। যাা থেকে সাধারণ মানুষ ভালোই বুঝতে পেরেছে দেশের আর্থিক ভান্ডারের পরিস্থিতি ও দেশের ভবিষ্যতের অবস্থা আগামী দিন কোথায় দাঁড়িয়ে।
ভারতবর্ষের 130 কোটি মানুষের কাছে আগামী দিন যে চরম ভয়াবহ হতে চলেছে তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়েছে এ দিনের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। করোনা মোকাবেলায় যখন চিন রাতারাতি হাসপাতাল তৈরি করেছে, তখন ভারতবর্ষের মানুষের কাছে করোনা মোকাবেলায় মিলল 21 দিনের লকডাউন। প্রতিদিন সাধারণ মানুষ দেশের আর্থিক রাজস্বে যে বিপুল পরিমাণ ট্যাক্সের বোঝা বহন করছে, সেইসব অর্থ চলে যাচ্ছে দেশের রাজনৈতিক নেতাদের স্বাচ্ছন্দ ও শিল্পপতিদের আর্থিক প্যাকেজে আর সাধারণ মানুষের কপালে মিলছে কেবলমাত্র প্রধানমন্ত্রীর শুকনো ভাষণ। দেশের শিল্পপতিরা ব্যাংক থেকে দেশের রাজস্ব খাজানার আর্থিক সুবিধা নিয়ে একের পর এক ব্যাঙ্ক দেউলিয়া ও অর্থ ভান্ডার শূন্য করছে, তারপরে দেশবাসীর কপালে এর থেকে বেশী আর কিবা বেশি জুটতে পারে?
বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বেহাল পরিস্থিতির পাশাপাশি নোট বাতিল থেকে জিএসটির ফলে দেশের আর্থিক মন্দা যখন দেশের অর্থনীতিকে ক্রমেই পঙ্গু অবস্থায় পরিণত করেছে তখন করোনার মতো ভয়াবহ মহামারী দেশের আর্থিক অবস্থার এমন অবনতি তৈরি করবে সেটাই স্বাভাবিক। যা দেশের মানুষকে পূরণ করতে ব্যাপক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে অাগামি দিনে। দেশের এই অর্থনৈতিক দুরবস্থা থেকে উঠবার জন্য দেশের সব মানুষকে একজোট হয়ে এগিয়ে আসা ছাড়া দ্বিতীয় বিকল্প পথ আর আছে বলে মনে করছে না অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দেশে কৃষি ও মানব সম্পদ এখন হতে পারে দেশের এই চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করার একমাত্র চাবিকাঠি। যা দেশের উৎপাদন ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে এই দুটি মাধ্যমকেই হাতিয়ার করতে হবে দেশের সরকারকে। ইতিমধ্যে সারা বিশ্বেই করোনা পরিস্থিতিতে বেহাল অর্থনৈতিক দুরবস্থার শিকার বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশদের, যেখানে বাদ যায়নি আমেরিকা, জার্মান, ইতালি, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের মত দেশ দেশের নাম। এ মতো পরিস্থিতিতে ভারতের সস্তায় মানব সম্পদ হতে পারে এই দেশের আর্থিক মন্দা থেকে ঘুরে দাঁড়াবার বিকল্প পথ। পাশাপাশি দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ভারতবর্ষের আর্থিক উন্নতির আরেকটি চাবিকাঠি। ফলে দেশের মানুষকে কর্মহীন পরিস্থিতি থেকে বের করে নিয়ে আসতে এছাড়া দ্বিতীয় বিকল্প পথ এই মুহূর্তে তৈরি হওয়া যথেষ্ট কঠিন বলে মনে করছে অর্থনীতিবিদরা।