একাধিক অভিযোগ জমা পরার পরেও বালুরঘাট পৌরসভার ত্রুটিপূর্ণ সংরক্ষন তালিকা প্রকাশ জেলা প্রশাসনের
১৯শে অক্টোবর, বালুরঘাটঃ ২৩শে সেপ্টেম্বর বালুরঘাট পৌরসভার খসরা সংরক্ষন তালিকা প্রকাশ করে সর্বদলীয় বৈঠক করে প্রকাশ করে জেলা প্রশাসন, এরপরে এই খসরা সংরক্ষন তালিকে নিয়ে একাধিক অভিযোগ জমা পরার পরেও বালুরঘাট পৌরসভার ত্রুটিপূর্ণ সংরক্ষন তালিকা প্রকাশ করলো জেলা প্রশাসন। বালুরঘাটের বেশ কিছু মানুষসহ বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ দায়ের করেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন সহ জেলা শাসকের কাছে। কিন্তু সেই সব কিছুকে তোয়াক্কা না করেই ১৭ই অক্টোবর প্রকাশিত হয় বালুরঘাট পৌরসভার ত্রুটিপূর্ণ সংরক্ষন তালিকা। অভিযোগ এই সংরক্ষন তালিকায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন দুই নম্বর রোস্টারকে ব্যাবহার করে সংরক্ষন করতে বলেছিলো। কিন্তু তপশিল জাতি ও উপজাতি সংরক্ষনে দুই নম্বর রোস্টারকে ব্যাবহার করলেও মহিলা সংরক্ষনে দেখা গেলো গড়মিল।
যেখানে প্রথম ক্ষেত্রে ভুল হিসাবে উঠে এলো তফশিল উপজাতি বালুরঘাট পুরসভায় একমাত্র আসন তাই প্রথমবার মহিলা সংরক্ষন হলেও এইবার দুই নম্বর রোস্টারে সেটা মহিলা আসনে সংরক্ষন হবে না।
মহিলা সংরক্ষনে ২ নম্বর ওয়ার্ড বাদ দিলে বাকি সব কটি ওয়ার্ড এক নম্বর রোস্টারকে ব্যাবহার করা হয়েছে। যা নিয়ম অনুযায়ী হয় না। যেখানে আছে ৭, ১০, ১৩, ১৮, ২১, ২৪ এবং ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড কেন মহিলা আসনে সংরক্ষিত হলো তার কোন প্রকৃ্ত ব্যাখ্যা নেই জেলা প্রশাসনের কাছে।
মহিলা সংরক্ষনে ৪০ শতাংশ আসন মহিলা করবার নিয়ম থাকলেও সেইখানেও তা মানা হয়নি, যেখানে নুন্যতম ১০টি আসনকে মহিলা করবার নির্দেশ থাকলেও দেখা গেলো ৯টি আসনকে মহিলা করা হয়েছে।
৭, ১০, ১৩, ১৮, ২১, ২৪ এই সংখ্যার ওয়ার্ড গুলো গতবার মহিলা আসনে সংরক্ষিত হয়েছিলো এবারেও সেই সংখ্যা গুলোকে সংরক্ষিত করা হয়েছে, যা নিয়ম অনুযায়ী করা যায়না।
এইবার প্রথম বার চকভৃগুর চারটি মৌজা যুক্ত হয়েছে বালুরঘাট পুরসভার সঙ্গে, যেখানে ১৩, ১৪ ও ১৫ তিনটি ওয়ার্ড গঠিত হলেও, দুইটি তপশিল জাতি ও একটি মহিলা সাধারন আসনে সংরক্ষিত হয়েছে। প্রথমবার এই এলাকা পুরসভার সঙ্গে যুক্ত হয়েই তিনটি আসন সংরক্ষিত হওয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উঠছে প্রশ্ন। এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় সরকার আমাদের জানান ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কিভাবে মহিলা আসনে সংরক্ষিত হয়, যেখানে এই ওয়ার্ড রোস্টারে মহিলা হিসাবে কোন উল্লেখ নেই। এইভাবে সংরক্ষিত হওয়ায় এই এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক প্রভাব পরবে, এইভাবে চকভৃগুকে গুরুত্বহীন করে তোলা উচিৎ হয়নি জেলা প্রশাসনের।
একাধিক ত্রুটি যুক্ত সংরক্ষিত তালিকা জেলা প্রশাসন করলেও বিরোধী রাজনৈতিক দল এই নিয়ে কোন আপত্তি তুলতে দেখা গেলো না, কিন্তু কেন সেইটা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। সঠিক নিয়মে আসন সংরক্ষন হলে এইবার সমস্যাই পরতে হতো আর এস পি ও সিপিএমের বেশ কিছু নেতার নির্বাচনে প্রতিদন্দিতা করতে। যেখানে রয়েছে প্রলয় ঘোষ, সুচেতা বিশ্বাস, অরিজিৎ চন্দের মতো নেতাদের, আবার বেশ কিছু বাম কাউন্সিলর যাতে নির্বাচনে প্রতিদন্দীতা না করতে পারে সেই বিষয়টাকেও প্রাধান্য দিয়েছে বলে বাম দলের অন্দরে উঠছে প্রশ্ন। পাশাপাশি শাসক শিবিরের গোষ্টী দন্দে বেশ কিছু কাউন্সিলরকে বাদ দেবার জন্য এই নিময় বহির্ভূত কৌশল অবলম্বন করেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যার ফলে এবার টিকিট থেকে বাদ পরছে প্রাক্তন চেয়ারম্যান সহ পাঁচ কাউন্সিলর। আর এই নিয়েই বিজেপি অভিযোগ করছে বাম তৃণমূল যোগ সুত্রের। বিজেপির অভিযোগ কেন সংরক্ষন নিয়ম মানা হলো না এইবারের সংরক্ষন তালিকা প্রকাশে। যার মূল কারন নিজেদের মধ্যে আতাত গড়ে তুলে এবার নির্বাচনে লড়াই করতে চাইছে বাম ও তৃণমূল কংগ্রেস। যা বালুরঘাটের মানুষ মেনে নেবে না বলেই দাবী করছেন বিজেপি।
যদিও বালুরঘাট টাউন তৃণমূল সভাপতি সুভাষ চাকি আমাদের জানান কিছু স্বার্থ যুক্ত মানুষ এইসব দাবী করছে, রোস্টার সর্বদলীয় বৈঠকে পাশ হয়েছে।