এনআরসি-র বাইরে থাকা বিদেশি নাগরিকদের জন্য অসমে তৈরি হচ্ছে ভারতের প্রথম ডিটেনশন ক্যাম্প, কী থাকছে জানুন
১৬ই সেপ্টেম্বর, আসামঃ হয় শিকড়ের প্রমাণ দাও। নাহলে ঠাঁই ডিটেনশন ক্যাম্প। অসমের গোয়ালপাড়ায় প্রায় প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে শরণার্থী শিবির। তবে শরণার্থী শিবির বললে ভুলই হবে। এ যেন এক জেলখানা।
পাঁচিলটা এতটাই উঁচু যে বাইরে চোখ যাওয়ার কোনও সুযোগই নেই। ফেলা আসা দিনগুলি একেবারে অতীত হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। নাগরিক পঞ্জিকরণ চূড়ান্ত হলে অন্য জগতের বাসিন্দা হবেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
গুয়াহাটি থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে মাটিয়া এলাকায় তৈরি হচ্ছে এই শরণার্থী শিবির। জেলখানা বললেও ভুল হবে না। প্রথম পাঁচিলের উচ্চতা কুড়ি ফুট। আর তারপরও ছয় ফুটের ঘেরাটোপ।
ভিতরটাই বেশ পরিকল্পনা করেই আধুনিক বন্দোবস্ত। ১৫টি চারতলা বাড়ি তৈরি হচ্ছে, এর মধ্যে ২টি মহিলাদের জন্য। থাকবেন ৩ হাজার মানুষ।
একটি ঘরে ৪-৫ জন অনুপ্রবেশকারী থাকবেন। শিশুদের সঙ্গে নিয়ে যে মহিলারা থাকবেন, তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।
পাঁচিল দিয়ে ঘেরা থাকবে ২.৫ হেক্টর জমি এলাকা। বাইরের পাঁচিল ২০ ফুট উঁচু, ভিতরের পাঁচিল ৬ ফুট উঁচু। থাকবে ওয়াচটাওয়ার।
আটকশিবিরে থাকবে একটি হাসপাতাল, একটি অডিটোরিয়াম এবং একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও থাকবে ১৮০টি শৌচাগার এবং ১টি সর্বসাধারণের রান্নাঘর।
গত বছর থেকেই এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। সরকারের আশা, ডিসেম্বরের মধ্যে এই বাড়িগুলির নির্মাণকাজ শেষ করে ফেলা যাবে।
প্রায় ৪৬ কোটি টাকা খরচ হবে ওই শিবির প্রস্তুত করতে। অসম পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশন লিমিটেড এটি তৈরির দায়িত্ব পেয়েছে।
৩১ অগস্ট অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। নাগরিক পঞ্জিতে যাঁদের নাম নেই তাঁরা এখন হন্যে হচ্ছেন। নাগরিকত্ব প্রমাণে অনেকেই ছুটছেন এদিক ওদিক।
হাতে আর মাত্র ১২০ দিন। এরপর শিকড়ের প্রমাণ দিতে না পারলে ঠাঁই হবে এই ডিটেনশন ক্যাম্প। এক অন্য পৃথিবীর বাসিন্দা হতে হবে তাঁদের। বিচ্ছিন্ন হতে হবে পরিচিত পরিবেশ থেকে।