অনশনে বেতন বাড়লেও স্কুল হাজিরায় অনিয়মিত বহু শিক্ষক, বহু বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পারফর্মেন্স নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
৩০ শে জুলাই, বালুরঘাটঃ বেতন বৃদ্ধি, পেকমিশন কিম্বা বকেয়া ডিএ নিয়ে সরকারের জনপ্রিয়তায় অনেকটা ভাটা পরেছে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী কিম্বা সরকার অধিনস্থ সংস্থা গুলোর কর্মচারীদের কাছে। এমনকি গত কয়েক মাসে রাজ্যবাসি দেখেছে কখনও রাজ্যের সরকারি কর্মচারী কিম্বা সরকার অধিনস্থ সংস্থা গুলোর কর্মচারীরা শাসক দলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে গত লোকসভা নির্বাচনে আবার বেতন বৃ্দ্ধির দাবীতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষকদের আমরণ অনশনের মতো ঘটনাও, আর সেই সব দাবী আদায় করে বহু গুন বেতন বাড়াতেও সফল হয়েছে শিক্ষক মহল। এখনও পর্যন্ত ষষ্ঠ পে-কমিশন চালু না হলেও যা পরিমান বেতন বৃ্দ্ধি হয়েছে তা তাদের আশানুরূপ বলেই মনে করছেন অনেক শিক্ষক। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে রাজ্যের সাধারন মানুষের কষ্টার্জিত করের টাকায় বেতন বাড়লেও বহু বিদ্যালয়ে অনিয়মিত হাজিরা থেকে বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পারফর্মেন্স নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। স্কুলের শিক্ষক হয়েও হাজিরায় অনিয়মিত, এমন নজির সত্যিই রাজ্যে ভুঁড়ি ভুঁড়ি। মাস গেলে বেতন হচ্ছে, মিলছে বকেয়া ডিএ পে কমিশন কিন্তু বহু বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পারফর্মেন্স নিয়ে কেন উঠছে প্রশ্ন। রাজ্যে শিক্ষার মান ক্রমেই তলানিতে যাচ্ছে, এমন রিপোর্ট সামনে এসেছে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে। বালুরঘাটের একজন প্রাক্তন শিক্ষক প্রশ্ন তুলেছেন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ছয় সাত ঘন্টা ক্লাস করেও কেন বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের বাইরে থেকে টিউশন নিতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ডিগ্রী ধারি যোগ্য শিক্ষক থেকেও কেন অভিভাবকদের হাজার হাজার টাকা ব্যায় করে তাদের ছেলে মেয়েদের বাইরে থেকে নিতে হচ্ছে টিউশন। অথচ সবাই না হলেও বহু বিদ্যালয়ে কেউ রাজনৈ্তিক দলের নেতা কিম্বা কেউ কোন সংগঠনের দায়িত্বে থাকার অজুহাতে বন্ধ রাখছে তাদের স্কুলের হাজিরা। আর এই সব দেখেও নিশ্চুপ প্রশাসন। অথচ সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সাধারন মানুষের কষ্টের করের টাকায় তাদের মাস গেলেই মিলছে বেতন, পেকমিশন কিম্বা বকেয়া ডিএ, নেই শিক্ষক কিম্বা সরকারী কর্মচারীদের কাজের সঠিক মূল্যায়ন। একজন প্রাথমিকের সিনিয়ার শিক্ষকের বর্তমান বেতন আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা, একজন সিনিয়র হাইস্কুল শিক্ষকের বেতন আনুমানিক ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা, একজন সিনিয়ার প্রধান শিক্ষকের বেতন আনুমানিক ৮০ হাজার টাকা, একজন সিনিয়ার অধ্যাপকের বেতন আনুমানিক ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রাথমিক থেকে কলেজ সর্বত্র পঠন পাঠনের মান এতোটাই কমেছে, যা নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন সাধারন মানুষ। শিক্ষক সমাজের সব থেকে সম্মানীয় স্থানে অবস্থান, তারা মানুষ গড়ার কারিগর কিন্তু কিছু মুষ্টিমেয় শিক্ষক সেই স্থানকে নষ্ট করছে বলে প্রশ্ন তুলছেন রাজ্যের সাধারন মানুষ। তাই সমাজের এই অবক্ষয়কে আটকাতে এখন একজন শিক্ষকই পারে তা রোধ করতে।