এক প্রসূতিকে পেটে লাথি ও চর মারার অভিযোগ উঠলো বালুরঘাট হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে

২৯শে মে, বালুরঘাটঃ প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলাকে চড় ও লাথি মারার অভিযোগ উঠল কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বালুরঘাট হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন রোগীর পরিবরের সদস্যরা৷ অভিযোগ মহিলার পেটে হাঁটু দিয়ে চাপ দিয়ে সন্তান প্রসব করানোর চেষ্টা করেছে নার্সরা। প্রতিবাদে সুপার ও সিএমওএইচকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে৷ বুধবার সকালে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে এমন ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে চাপে পড়েই ছুটি না নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেপাত্তা হয়ে যায় অভিযুক্ত চিকিৎসক৷ প্রসূতি মহিলার সঙ্গে এমন ব্যবহারে অভিযুক্ত চিকিৎসককে শোকজ করেছেন হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস। পুরো ঘটনায় শোরগোল পড়েছে জেলায় ৷
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের মোহনার মুগলিশপুরের বাসিন্দা জয়দেব পালের স্ত্রী বৃষ্টি মহন্ত পাল৷ গত রবিবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে তাঁকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করান পরিবারের লোকেরা৷ সেই সময় হাসপাতালের চিকিৎসক সঙ্গীতা রায় রোগী দেখলেও সোমবার সকালে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ৷ এদিকে বাড়ি ফিরতেই প্রসব যন্ত্রণা অনুভব করায় মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করায় পরিবারের লোকেরা৷ তারপর থেকে যন্ত্রণায় ছটফট করলেও ঐ মহিলাকে কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি নার্স ও দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক। উল্টে মহিলাকে চড় ও লাথি মারার অভিযোগ উঠেছে ডাক্তার ও নার্সের বিরুদ্ধে৷
অভিযোগ, ভোর রাতে মহিলার পেটে হাঁটু দিয়ে চাপ দিয়ে প্রসব করানোর চেষ্টা করে নার্সরা। তারপর সিজার করে মহিলার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হলেও আশঙ্কাজনক হয়ে অসুস্থ হয়েছে সদ্যজাত৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি ওই সদ্যোজাতকে এসএনসিইউতে ভর্তি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷ যার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে বিক্ষোভ ফেটে পাড়েন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। বিক্ষোভ দেখানো হয় সুপার ও সিএমওএইচকে ঘিরেও ৷
মহিলার স্বামী জয়দেব পাল জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসে ব্যস্ত থাকেন। বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবসা বাড়ানো তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য। অভিযুক্তকে হাতের কাছে পেলে তাঁকে মেরে ফেলবেন বলেও নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মহিলার স্বামী জয়দেব পাল৷
প্রসূতির বাবা জয়ন্ত মহন্ত জানিয়েছেন, সরকারি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জায়গা নেই। হাসপাতাল এখন কসাইখানায় পরিণত হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সের চরম গাফিলতিতে শিশুটি এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই পরিবারের লোকেরা৷
হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসককে শোকজ করা হয়েছে। ঘটনার পূর্ণঙ্গ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *