প্রসুতি মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ঘেরাও বালুরঘাট হাসপাতালে
৩০ এপ্রিল, বালুরঘাটঃ চিকিৎসকের গাফিলতিতে এক প্রসুতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বালুরঘাট হাসপাতাল সুপারকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ রোগীর আত্মীয় পরিজনদের। দীর্ঘক্ষন ধরে চলা এই বিক্ষোভের জেরে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে ছুটে আসে বালুরঘাট থানার পুলিশ। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।
এদিকে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানিয়েছেন তিনি অভিযোগ পেয়ে এক সদস্যের কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর রিপোর্ট খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বালুরঘাট হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে গতকাল সকালে বালুরঘাট থানার পারপতিরাম অঞ্চলের বাসিন্দা রণজ্যিৎ চৌধুরী তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী চুমকি মালো (২৯) কে প্রসব বেদনা নিয়ে চিক্যিস্যক অরুপ দে র তত্ববধানে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে প্রসুতির স্বামী রণজ্যিৎ চৌধুরীর অভিযোগ রোগীকে পরীক্ষা করে চিকিৎসক তাকে স্বাভাবিক ভাবে প্রসব করানোর জন্য চেষ্টা করা হবে বলে জানান এবং তার জন্য তাকে মেটানিটি ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। রণজ্যিৎ চৌধুরীর আরও অভিযোগ রোগীকে সকালে একবার মাত্র চিকিৎসক দেখলেও তারপর থেকে আর তিনি রোগীকে দেখতে আসেননি। এদিকে বিকেলের পর থেকে নার্সরা তার স্ত্রীকে প্রসব করাবার চেষ্টা করলেও কোন ফল না হওয়ায়, যার পরিনাম রাত্রে রোগীর প্রচন্ড রক্তপাত হয়ে অবস্থ্যা খারাপ হয়ে পড়লে কর্তব্যরত নার্সরা চিক্যিসককে খবর দিলেও চিকিৎসক কোন প্রকার ব্যাবস্থা গ্রহন করেনি বলে তার অভিযোগ। ফলে ক্রমাগত রক্তপাতে রোগীর অবস্থ্যা অবনতি ঘটে।
তার আরো অভিযোগ রাত আড়াইটে নাগাদ ফোনে খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে এলে ব্লাড ডোনেট করে রক্ত নিয়ে আসতেই তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
এদিকে আজ সকালে চুমকী মালোর মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে তার পরিবারের অনান্য পরিজনরা হাসপাতালে ছুটে আসে। খবর পেয়ে চুমকী মালোর বাবার বাড়ির লোকজনরা ও হাসপাতালে চলে আসেন। এরপরেই ওই চিক্যিস্যকের গাফিলতি ও অবহেলার অভিযোগ তুলে দফায় দফায় হাসপাতালের সুপারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। পাশাপাশি যাতে অন্য কোন রোগীর ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় তার জন্য ওই চিকিৎসকের কড়া শাস্তির দাবি জানাতে থাকেন তারা।
হাসপাতালে ঘেড়াও এর খবর পেয়ে ছুটে আসে বালুরঘাট থানার পুলিশ। পরে দীর্ঘক্ষন ধরে চলা ঘেরাও বিক্ষোভ পুলিশের হস্তক্ষেপে হাসপাতাল কর্তৃক যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দেওয়ার পর বিক্ষোভ তুলে নেয় রোগীর পরিবার পরিজনেরা।
যদিও হাসপাতাল সুপার তপন বিশ্বাস অবশ্য জানিয়েছেন রোগীর খারাপ অবস্থার খবর পেয়ে চিকিৎসক এসে দু বোতল ব্লাড দিয়েছেন পাশাপাশি তাকে সিসিইউতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করার কথা বলেন। তবে সিসিইউতে নিয়ে গেলেও রোগীকে বাঁচানো যায়নি বলে তিনি জানান।